Home » ওযুর ফরজ কয়টি

ওযুর ফরজ কয়টি

ওযু ভঙ্গের কারণ

by inthenameofallah
ওযুর ফরজ কয়টি

অযু  (لوضوء) শব্দটি আরবী ভাষা থেকে উৎপত্তি হয়েছে। অভিধানিক অর্থগত ভাবে ওযু শব্দের অর্থ পবিত্রতা অর্জন করা বা পরিচ্ছন্ন হওয়া।  মুমিন জীবনে ইবাদতের গুরুত্ব অপরিসিম। আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় পবিত্রতা অর্জন করা ইবাদতের পূর্বশর্ত। ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় একজন মুমিন সবসময় নিজেকে পরিচ্ছন্ন বা পবিত্র রাখতে বদ্ধ্ব পরিকর। 

মানুষ ব্যক্তি জীবনে শারিরীক ভাবে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সুস্থতা অসুস্থতা সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। কিন্তু একজন প্রকৃত মুমিন সবসময় আল্লাহকে স্বরণে রাখার চেষ্টা করে। তা হতে পারে সর্বোক্ষণিক যিকিরের মাধ্যমে, হতে পারে সময় মত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বা হতে পারে দান ও সাদাকাহ এর মাধ্যমে। কিন্তু  এতে করে একজন মানুষের পক্ষে সব সময় ওযু ধরে রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষ অনেক সময় ঠিক বুঝতে পারি না কেন বা কিভাবে আমাদের অযু ভঙ্গে যায়। এ নিয়ে আমাদের মাঝে চলতে থাকেদ্বিধা দ্বন্দ্ব।

নবুয়তের দায়িত্বে করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূলুল্লাহ (সা.)কে তাওহীদের পরেই যে নির্দেশ দেন সেটি হলো “নিজেকে পাক পবিত্র ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।” (সূরা আল মুদ্দাসির: ৪) “যারা পাকসাফ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন।” (সূরা আত্ তওবা: ১০৮)

ইসলাম পবিত্রতার তিনটি মাধ্যম নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। যথা-
* অযু গোসল তায়াম্মুম

অযু কেন ফরজ হয়

১ . প্রত্যেক নামাযের জন্য। চাই ফরজ কিংবা নফল।
২. জানাযার নামাযের জন্য।
৩. তিলাওয়াতে সিজদার জন্য।

অযু কখন ওয়াজিব হয়

১. বায়তুল্লাহ তাওয়াফের জন্যে।
২. কুরআন পাক স্পর্শ করার জন্যে।

ওযুর ফরজ কয়টি

১. একবার গোটা মুখমণ্ডল ধোয়া। অর্থাৎ কপালের উপর মাথার চুলের গোড়া থেকে থুতনির নিচ পর্যন্ত এক কান থেকে আরেক কানের গোড়া পর্যন্ত।
২. দু’হাত অন্ততঃ একবার কনুই পর্যন্ত ধোয়া।
৩. একবার মাথার এক চতুর্থাংশ মাসেহ করা।
৪. একবার দু’পা টাখনু পর্যন্ত ধোয়া।

ওযু ভঙ্গের কারণ

১ প্রশ্রাব অথবা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া।
২. দেহের কোন অংশ থেকে রক্ত বের হয়ে গড়িয়ে যাওয়া।
৩ বমির সাথে রক্ত, পুঁজ, খাদ্য অথবা অন্যকিছু বের হলে এবং মুখ ভরে বমি করলে।
৪. অল্প করে বারবার বমি হলে এবং তার পরিমাণ মুখভরে বমির সমান হলে।
৫. কফ অথবা থুথুর সাথে বেশি পরিমাণে রক্ত এলে।
৬. কামভাব ছাড়া বীর্যপাত হলে।

৭. চোখে কোন কষ্টের কারণে ময়লা বা পানি বের হয়ে যদি গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু যার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ে তার জন্য মাফ।
৮. মহিলাদের স্তনে ব্যথার কারণে দুধ ছাড়া কিছু পানি যদি বের হয় তাহলে অযু নষ্ট হবে।
৯. এস্তেহাযার রক্ত এলে।
১০. যেসব কারণে গোসল ওয়াজিব হয় সেসব কারণে অযু নষ্ট হয়।
১১. চিত, কাত অথবা ঠেস দিয়ে ঘুমালে।
১২. যে যে অবস্থায় জ্ঞান ও অনুভূতি থাকে না।
১৩. রোগ অথবা শোকের কারণে জ্ঞান হারালে।
১৪. নেশাগ্রস্ত হলে
১৫. নামাযে অট্টহাস্য করলে।
১৬. রোগী শুয়ে নামায পড়তে পড়তে যদি ঘুমিয়ে যায়।
১৭. নামাযের বাইরে যদি কেউ দু’জানু হয়ে বসে বা অন্য উপায়ে ঘুমিয়ে পড়ে এবং তার দু’পাঁজর মাটি থেকে আলাদা থাকে তাহলে অযু নষ্ট হবে।

Related Posts

যে কারণে অজু ভাঙে না

১) যদি বমি হয়, কিন্তু তা মুখ ভরে না হয়। 
২) নিজের লজ্জা স্থান স্পর্শ করলে। 
৩) নারীর শরীর স্পর্শ করলে।
৪) ঘুমের ঘোরে নাক ডাকলে। 
৫) শরীরের কোনো স্থান থেকে রক্ত বের হলে অজু ভাঙে না, যদি গড়িয়ে না পড়ে। 
৬) কোনো ক্ষত স্থান অথবা কান থেকে পোকা বের হলে।
৭) কফমিশ্রিত বমি হলে। কারণ কফ বের হওয়াকে ইসলামের পরিভাষায় ‘হাদাস’ বলা হয় না। ‘হাদাস’ হলেই অজু ওয়াজিব হয়, অন্যথায় নয়। 
৮) নিতম্বদ্বয় জমিতে ঠেসে লেগে থাকা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়লে। (
৯) যদি শরীরের গোশত ঝরে পড়ে; কিন্তু রক্ত বের না হয়। যেমন—ইরকে মাদানি। এটা এক ধরনের ফোসকা বিশেষ, যা চামড়ার উপরিভাগে ওঠে এবং একসময় তা গোশতসহ শরীর থেকে ঝরে পড়ে; কিন্তু রক্ত বের হয় না। মূল কথা হলো গোশত পাক। তাই গোশত ঝরে পড়লে অজু ভাঙে না। যদি এর সঙ্গে রক্তও প্রবাহিত হয়, তাহলে প্রবাহিত রক্তের কারণে অজু ভেঙে যাবে। 
১০) নামাজরত ব্যক্তির ঘুমের দরুন অজু ভাঙে না। চাই তা দাঁড়ানো অবস্থায় হোক অথবা বসা, রুকু বা সেজদা অবস্থায় হোক। 

ওজুর মাকরূহ কি

ক. প্রয়োজনের বেশি পানি ব্যয় করা।
খ. প্রয়োজনের চেয়ে কম পানি ব্যয় করা।
গ. মুখমণ্ডলে এমনভাবে পানি নিক্ষেপ করা যে, পানির ছিঁটা অন্যত্র পড়ে।
ঘ. ওজুর সময় অপ্রয়োজনীয় কথা-বার্তা বলা।
ঙ. ওজুর সময় বিনা ওজরে অন্যের সাহায্য নেয়া।
চ. নতুন পানি নিয়ে তিনবার মোথা মাসেহ করা।

You may also like