Table of Contents
শিরক মহা পাপ বা اَكْبَرُ الْكَبَائِرْ তথা কবীরা গুণাহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ তায়ালা বলেন- إِنَّ الشَّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ নিশ্চই শিরক মহা পাপ। -(সূরা-লুকমান- ১৩)। বুখারী, মুসলিম শরীফের হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল-اَيُّ الذَّنْبِ اَعْظَمُ অর্থাৎ সবচেয়ে বড় পাপ কোনটি? উত্তরে তিনি বলেন- أَنْ تَجْعَلَ ِللّه ِندًّا وَهُوَ خَلَقَكَ অর্থাৎ আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক গ্রহণ করা অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।
শিরক কাকে বলে
আল্লাহর সাথে কোন অংশীদার স্থাপন করা বা একাধিক মা’বুদে বিশ্বাস করাকে শিরক বলা হয়। অথবা যে কোন ইবাদতকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে না করে অন্য কারো জন্য করা বা ইবাদতে কাউকে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করাকে শিরক বলা হয়। শিরক করার কারণে ঈমান থেকে খারিজ হয়ে যায় এবং তার অতীতের সমস্ত আমলই বিনষ্ট হয়ে যায়।
মহান আল্লাহর বাণী- وَلَقَدْ أُوْحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ اَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ অর্থাৎ হে নবী! তোমার প্রতি এবং তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি এমর্মে ওহী পাঠানো হয়েছিল যে, যদি তুমি শিরক কর তবে তোমার সমস্ত আমলই বিনষ্ট হয়ে যাবে। এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত। -(সূরা-যমার-৬৫)।
মুশরিক অবস্থায় মারা গেলে জান্নাত তার জন্য চিরতরে হারম হয়ে যাবে; আর জাহান্নাম হবে তার স্থায়ী ঠিকানা। আল্লাহ তায়ালা বলেন : إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْحَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأ لارُ। অর্থাৎ নিশ্চই যে ব্যক্তি শিরক করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং জাহান্নাম হবে তার স্থায়ী ঠিকানা। -(সূরা-আল-মায়িদাহ-৭২)
শিরক কত প্রকার
১. )شِرْكْ أَكْبَرُ( শিরকে আকবার বা বড় শিরক।
২.)شِرْكَ أَصْغَرُ( শিরকে আছগার বা ছোট শিরক।
শিরক আকবর কি :
১. আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, কন্যা আছে এ জাতীয় আক্বিদা রাখা।
২. আল্লাহর জাত বা গুণের সাথে কাউকে শরীক বা সমকক্ষ মনে করা।
৩. মৃত ব্যক্তির নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা।
৪. উদ্দেশ্য সফরের জন্য মাজারে গমন করা; মাজার বা অন্য কিছুকে সিজদা করা।
৫. কারো সম্পর্কে এ বিশ্বাস রাখা যে, তিনি গায়েব জানেন, অথবা এ বিশ্বাস রাখা যে তিনি সর্বত্র হাজির নাজির বা তিনি আমাদের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছেন।
৬. গাইরুল্লাহ তথা মাজার, পীর, ফকির ইত্যাদির নামে জবেহ, কুরবানী বা মান্নত করা।
৭. বাইতুল্লাহর ন্যায় কারো কবর বা গৃহকে তাওয়াফ করা।
৮. কোন পীর বুজুর্গ বা ফকিরের নামের জিকির করা বা তাসবীহ আদায় করা।
৯. আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে লাভ-লোকসানের মালিক মনে করা।
শিরক আছগারের কি :
শিরকের দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে শিরকে আছগার বা ছোট শিরক। শিরকে আছগারের কারণে মানুষ ঈমান হারা না হলেও অতি গোপণে তা মানুষের মাঝে ঢুকে পড়ে। মানুষ এটাকে কিছুই মনে করে না। ফলে অনেক সময় তা শিরকে আকবার পর্যন্ত পৌঁছিয়ে তাকে ঈমানহারা করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য ছোট শিরক থেকেও খুব সতর্ক থাকতে হবে।
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- انْ اَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمْ الشَّرْكُ الْأَصْغَرُ مُسْنَدُ أَحْمَدَ) শিরকের ব্যাপারে তোমাদের উপর আমার বেশি ভয় হয়। -(আহমাদ)। ছোট শিরকের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন “রিয়া” (লোক দেখানো আমল)। অন্য হাদীসে এসেছে- أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِمَا هُوَ اخْوَفُ عَلَيْكُمْ عِنْدِى مِنَ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ قَالُوا بَلَى يَارَسُوْلَاللهِ قَالَ الشَّرْكُ الْحَفِيُّ يَقُوْمُ الرَّجُلُ فَيُصَلَّى فَيُزَيِّنُ صَلَاتَهُ لِمَا يُرَى مِنْ نَظْرِ رَجُلٍ. (رَوَاهُ أَبَوْدَاوُدَ بِسَنَدٍ صَحِيحٍ) অর্থ: রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি কি তোমাদেরকে দাজ্জাল থেকে ভয়ানক বস্তুর সংবাদ দিব? সাহাবায়ে কিরাম আরজ করলেন অবশ্যই বলে দিন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন সূক্ষ্ম শিরক (আর তাহল) লোক দেখানোর জন্য নিজের নামাযকে সুন্দর ভাবে আদায় করা।
وَالْحَلَفُ بِغَيْرِ الله وَقَوْلُ مَا شَاءَ الله وَشَنْتَ وَلَوْلَا اللَّهُ وَأَنْتَ وَهَذَا مِنْ اللَّهِ وَمِنْكَ وَأَشْبَاهُ ذَالِكَ وَالرِّيَاءِ الْيَسِيرُ وَالسُّمْعَةُ مِنْ أَنْوَاعِ الشِّرْكِ الْأَصْغَرِ. نَحْوَ تَصْحِيحِ الْعَقِيدَةِ ، الْإِرْشَادُ إِلَى تَوْحِيدِ رَبِّ الْعِبَادِ)
অর্থাৎ (ছোট শিরকের মধ্যে রয়েছে) গাইরুল্লাহর নামে শপথ করা (আল্লাহর নাম ব্যতিত অন্য কিছু নিয়ে শপথ করা) যেমন, কুরআন মাজীদের শপথ, মা-বাবা, ছেলে- সন্তানের কছম, আমানতের কছম ইত্যাদি) তেমনিভাবে এ ধরনের বলা যে, যদি জনসাধারণের ধ্যান ধারনায় ও কথাবার্তায় কিছু প্রচলিত কুফর ও শিরক।
মহান আল্লাহ তায়ালার বাণী- قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلا مَا شَاءَ اللهُ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِي السُّوءُ
অর্থ:- হে মুহাম্মদ তুমি বলে দাও, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিত আমি নিজের ভাল- মন্দের, কল্যাণ-অকল্যাণের কোন অধিকার রাখিনা। যদি আমি গায়েব জানতাম তবে অনেক কল্যাণ অর্জন করে নিতাম আর কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করতে পারত না। -(সূরা-আ’রাফ-১৮৮)
পাঠকবৃন্দ, লক্ষ্য করুন আল্লাহ তায়ালার ঘোষণার প্রতি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন দুনিয়া-আখেরাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। এবং আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে প্রিয় ও নিকটতম ব্যক্তি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জ্ঞানী। তিনি শুধু মানবকুলের রাসূলই নয় বরং জ্বীন জাতির প্রতিও প্রেরিত রাসূল। এতদসত্ত্বেও তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা হল আল্লাহর পক্ষ থেকে অবগত হওয়া ছাড়া কল্যাণ-অকল্যাণ এবং গায়েবের কিছুই তিনি জানতেন না। যদি গায়েব জানতেন তা হলে ওহুদের ময়দানে, তায়েফে এবং বিভিন্ন সময়ে কাফেরদের পক্ষ থেকে কষ্টকর পরিস্থিতির স্বীকার হতেন না।
তবে আমাদের দেশে যে সমস্ত নামধারী খোনকার, কবিরাজ, গণক, যাদুকর ও ভন্ডপীররা দাবী করে থাকে যে, যে কোন সমস্যার সমাধান তারা দিতে সক্ষম। গায়েব সংক্রান্ত খবরও তারা বলে থাকে তাদের অবস্থান কোথায় হতে পারে এবার বলুন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জ্বীনের নবী হওয়া সত্ত্বেও স্পষ্ট বলেন যে, আমি গায়েবের কিছুই জানিনা। যারা জ্বীন হাজির করার দাবী করে, গায়েবের সন্ধান দেয়ার বা সমস্যার সমাধান দেয়ার দাবীদার তারা কতটুকু মিথ্যাবাদী তা কি ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন আছে? তারা শুধু মিথ্যাবাদী নয় বরং এ জাতীয় দাবীতে পুরা ইসলামী শরীয়তের উপর অপবাদ আরোপকারী।
আর যারা তাদের নিকট গিয়ে তাদেরকে বিশ্বাস করল তাদের সম্পর্কে হাদীসে এসেছে-
وَعَنْ أَبِي : هُرَيْرَةَ رَضيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَتَى كَاهِنًا فَصَدَقَهُ بِمَا يَقُوْلُ فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন গনকের নিকট এসে তার কথাকে বিশ্বাস করল সে যেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি অবতীর্ণ পূর্ণ দ্বীনকেই অস্বীকার করল। -(আবু দাউদ)। অতএব উক্ত আক্বীদাসমূহ নিয়ে তাদের নিকট গমন করা কুফুরী। অপর দিকে গায়েব সংক্রান্ত জ্ঞান, কল্যাণ-অকল্যাণের মালিক একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। এ গুলি আল্লাহর গুণ। আল্লাহ তায়ালার গুণে অন্যকে গুণান্বিত মনে করা শিরক।
অতএব স্পষ্টই বলা যায় যে, যারা গণক, খনকার, কবিরাজ, যাদুকর, মাজার ও ভন্ড পীরদের নিকট এহেন ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে যায় যে, তারা গায়েব জানে, সন্তান দিতে পারে, যে কোন সমস্যার সমাধান দিতে পারে, রোগ থেকে শিফা দিতে পারে ইত্যাদি তারা কিছু অর্জন করুক আর নাই করুক অত্যন্ত ভ্রান্ত বিশ্বাসের কারণে কাফের-মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে ঈমান হারা হয়ে ফিরে আসল। তেমনিভাবে উপরে আল্লাহ নিচে আপনি, আল্লাহর শক্তিও তোর সাথে পারবে না। আপনার উপর পূর্ণ ভরসা করি বা আপনার সাহায্য ছাড়া কোন উপায় নেই। চাকরি না থাকলে বা ফসল না হলে বাঁচতে পারব না। আল্লাহ চোখে দেখেন না বা কানে শুনেন না।
বিপদে এরূপ বলা যে, আল্লাহ শুধু আমাকেই দেখেন অন্য কাউকে দেখেন না ইত্যাদি ধরণের কথাবার্তা বলা এক ধরণের শিরকী কাজ। মুমিনদের কর্তব্য হচ্ছে বিপদে ও কষ্টে সবরের সাথে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা আর ভাল অবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। নিজের প্রতিটি কথাবার্তায় সতর্ক থাকা। কেননা আমাদের প্রতিটি কথা- কাজ লেখার জন্য ফেরেশতা প্রস্তুত রয়েছেন। মুমিন বান্দা কোন অবস্থায়ই কল্যাণমুক্ত না।
মুসলিম শরীফের হাদীসে বর্ণিত আছে-
قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَجَبًا لِاَمْرِ الْمُؤْمِنِ أَنْ أَمْرَهُ كُلَّهُ لَهُ خَيْرٌ وَلَيْسَ ذالك لأحد الأللْمُؤْمِنَ إِنْ أَصَابَتْهُ سَرَّاءُ شَكَرَ فَكَانَ خَيْرًالَهُ وَإِنْ أَصَابَتْهُ ضَرَّاءصَبَرَ فَكَانَ خَيْرُ الَهُ.
অর্থ: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মুমিনের ব্যাপারটি আশ্চার্য জনক। কেননা তার সর্বাবস্থাই কল্যাণকর। মুমিন ব্যতিত অন্য কারো ব্যাপারটি এরূপ নয়। মুমিন বান্দা যদি ভাল অবস্থায় থাকে সে জন্য শুকরিয়া আদায় করে এটা তার জন্য কল্যাণকর। আর যদি বিপদাপদ বা কষ্টে থাকে সে জন্য ধৈর্য্য ধারণ করে সেটাও তার জন্য কল্যাণকর।
মুসলিম শরীফের উক্ত হাদীসটি একজন মুমিন মুসলমানের জন্য বিরাট সুসংবাদ বহন করে। সর্বাবস্থায়ই সে সান্তনা নিতে পারে এ বিশ্বাস করে যে; আমার ভাল-মন্দ সব কিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপ। এতেই, কল্যাণ নিহিত আছে। কাজেই যে কোন পরিস্থিতিতেই নিজেকে শান্তনা ও প্রবোধ দিয়ে শিরক কুফর বা ঈমান বহির্ভূত প্রত্যেক বিষয় থেকে নিজেকে অতি সহজেই মুক্ত রাখতে সক্ষম হবে।
শিরক থেকে বাঁচার উপায় কি
শিরক থেকে বাঁচার জন্য সর্বপ্রথম শিরক কাকে বলে তা জানতে হবে। এরপর যে সমস্ত কাজে-কর্মে, কথা-বার্তায় শিরকের আশংকা রয়েছে তা থেকে দূরে থাকতে হবে। সর্বদাই সতর্ক থাকতে হবে যাতে শিরকের অণু প্রবেশ করে ঈমান নষ্ট না করে। সতর্কতা অবলম্বন করার পরেও কোন ব্যক্তি শিরক থেকে নিরাপদ নয়। কেননা, শিরক অতি সূক্ষ্মভাবে মানুষের মাঝে প্রবেশ করে। এ জন্য স্বয়ং নবী রাসূলগণ আল্লাহর বিশেষ বান্দা হওয়া সত্ত্বেও নিজেদেরকে শিরক থেকে নিরাপদ ভাবেন নি। অথচ তাদের পুরা জিন্দেগীর সংগ্রামই ছিল শিরক, কুফর ও মূর্তি পূজার বিরুদ্ধে। এ থেকে বাঁচার জন্য তারা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। হযরত ইব্রাহীম (আ) এর দোয়াকে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন।
ইব্রাহীম (আ) দোয়া করেছিলেন- وَاجْنُبْنِي وَبَنِيَّ أَنْ نَعْبُدَ الْأَصْنَامَ
অর্থ: (হে আল্লাহ) আমাকে এবং আমার সন্তানগণকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন। -(সূরা-ইব্রাহীম-৩৫) আল্লাহর খলীল হযরত ইব্রাহীম (আ) এর পর আর কোন-ব্যক্তি নিজেকে শিরক থেকে নিরাপদ মনে করতে পারে? এ জন্য আল্লাহর হাবীব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া শিখিয়ে গেছেন, দৈনিক এই দোয়া পাঠ করলে আল্লাহ তায়ালা ছোট বড় শিরক থেকে হিফাজত করবেন। আর অজানা ভাবে হয়ে গেলে তা ক্ষমা করে দিবেন।
হাদীসটি হচ্ছে- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, শিরক তোমাদের মাঝে পিঁপড়ার বিচরণ থেকে ও অতি সূক্ষ্ম, তবে আমি একটি বিষয়ের সন্ধান দিচ্ছি যা পালন করলে ছোট বড় সব শিরক আল্লাহ তোমার থেকে দূর করে দিবেন। শিরক থেকে বাঁচার জন্য এ দোয়াটি পাঠ করো। اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُبِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ وَاسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া-আনা আ’লামু ওয়া-আসতাগফিরুকা লিমা লা-আ’লামু।
অর্থ: হে আল্লাহ! জেনে বুঝে (ইচ্ছাকৃতভাবে) তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর অজানা শিরক থেকে তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। (বোখারী আল-আদাবুল মুফরাদ-৭৬১) দোয়াটি শব্দের কিছুটা ব্যবধানসহ অন্য হাদীস গ্রন্থেও বর্ণিত হয়েছে।